চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে না সাভারে অভিযান
নাজমুল হুদা ,সাভার : দেশের নিত্য খাদ্য পণ্যের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোকাম সাভারে চালের ঊর্ধ্ব-মূল্য ঠেকাতে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাভারে ধান-চালের বাজার দর স্থিতিশীল রাখতে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে খাদ্যমন্ত্রী কঠোর হুশিয়ারী দেয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। মজুদ ও দর পরিস্থিতি যাচাইয়ে এ অভিযান করছেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের সর্ববৃহৎ পাইকারি চালের আড়ৎ সাভারে নামা বাজারে খুচরা চাল বাজারে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাহিদুর রহমান। এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী সালাম রাইস এজেন্সী মালিক সালাম সাভার নিউজ কে বলেন বর্তমানে যদিও ধানের মৌসুম চলছে তবে বন্যার অজুহাতে চাতাল মালিকরা গত কয়েক সপ্তাহে প্রতি বস্তায় চালের দাম ৩শ থেকে ৪শ টাকা বাড়িয়েছে। প্রতিদিনই ৫০ থেকে ১শ টাকা করে বাড়িয়ে দিচ্ছে তারা। আমরা চাহিদা মতো সরবরাহ পাচ্ছি না। গত সপ্তাহের মধ্যে বস্তা প্রতি মোটা চালে ২শ টাকা ও চিকন চালে ৪শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বন্যার অজুহাতে তারা ধান পাচ্ছেন না বলে এভাবে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ব্যাংকে টাকা পাঠিয়েও ঠিক মতো চাল পাচ্ছি না। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে আমরা পাইকারি বা খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনোভাবেই জড়িত না। আমরা যেমন দামে কিনি তেমন দামেই সীমিত মুনাফা করে বিক্রি করি। চালের দাম বস্তায় ৫শ টাকা বাড়লে তো আমাদের লাভ ৫শ টাকা থাকে না। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বাজারে সীমিত লাভে বিক্রি করে। অভিযান শেষে সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাহিদুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমদানি মূল্যের সঙ্গে বিক্রয় মূল্য ও গুদামে মজুদের পরিমাণে গড়মিল না থাকায় তাদের জরিমানা না করে সতর্ক করা হয়। জেলা প্রশাসন থেকে আগেও তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। কেউ যেন অধিক মুনাফার আশায় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে না ফেলেন। তিনি বলেন, ক্রয়মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে যেন বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করেন সেই বিষয়ে আজ এখানকার পাইকারদের সতর্ক করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে যারা কারসাজি করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সময় চালের বিভিন্ন পাইকারি আড়ৎ ও খুচরা বাজার ঘুরে ঘুরে দাম যাচাই করেন। মিল গেট, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মজুদ ও দর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। অভিযানে বিনা লাইসেন্সে ব্যবসা পরিচালনা করায় কৃষি বিপণন আইনে মেসার্স নুর ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা অনাদায় ৭ দিন ও মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সকে ২০ হাজার টাকা অনাদায় ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অভিযানে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মোহাম্মদ মুসা, সাভার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, খাদ্য পরিদর্শক লিপি খানমও খাদ্য পরিদর্শক সানজিদা সুলতানা স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কথা শুনেই প্রায় ২শতধিক দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান চাল ব্যবসায়ীরা। অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাজারে। এতে মুহুর্তের মধ্যেই সব চালের আড়ৎ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। অভিযানে এ সময় সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নাহিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন চালের বাজার স্থিতিশীর রাখতে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হচ্ছে। যেখানে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা হয়েছে সেখানে জরিমানা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মিলে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেসব আড়ৎদার রয়েছে তারা আমাদের কাছে ওয়াদা করেছেন প্রতিনিয়ত মজুদ পরিস্থিতি রিপোর্ট প্রেরণ করবেন। এবং যারা ফুটগ্রেন ব্যবসা করেন তারা যেন লাইসেন্স করেন এবং এর আওতাভুক্ত হয় সেই বিষয়েও আমরা পদ¶েপ গ্রহণ করেছি
Leave a Reply