কুমিল্লা শহরের এক বাসা থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থী এবং তার মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে কুমিল্লা নগরী ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুরী এলাকার ‘নেলি লজ’ নামের একটি তিনতলা ভবনের দোতলার ফ্ল্যাট থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত দুজন হলেন- কুমিল্লা আদালতের সাবেক কর্মকর্তা মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার (৫০) এবং তার মেয়ে কুবির ছাত্রী সুমাইয়া আফরিন (২৪) ।
এদিকে কুবি ছাত্রী ও তার মাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমেছেন বিশ্যাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলমান ছিল।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে, আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি জানান। নাহলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ শিক্ষার্থীদের জানান, তারা বেশ কয়েকটি সূত্র ধরে কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন। পিবিআই, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবও তদন্ত শুরু করছে। একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি ঘটনা তদন্তে শিক্ষার্থীদের কাছে ৪৮ ঘণ্টা সময় চান।
বিক্ষোভে আসা নিহত সুমাইয়া আফরিনের সহপাঠী সামিয়ুন সুলতানা ঐশী বলেন, “এই অকাল মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করছি।”
এর আগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হায়দার আলী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদা কামাল, প্রক্টর আব্দুল হাকিমসহ প্রশাসন ও শিক্ষকদের একটি দল সুমাইয়া আফরিনের বাসায় যান। পরে তারা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী বলেন, “অকালে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু খুবই মর্মান্তিক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটুক সেটি আমরা চাই।”
প্রক্টর আব্দুল হাকিম বলেন, “আমরা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি তদারকি করা হবে।”
কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মাহিনুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সুমাইয়া ও তার মায়ের মরদেহ আলাদা কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শরীরে আঁচড় ও রক্তের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।”










