জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার র্যাগিংয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম রাশিদুল আলম।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রশাসন আসার পর গত এক বছরে র্যাগিং, গণরুম, গেস্টরুমের মতো ঘটনা অনেকটাই কমেছে। এখন এসব কালচার নেই বললেই চলে। কিছু ছোটখাটো মৌখিক অভিযোগ পেলেও শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সেগুলোর সমাধান করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, প্রশাসনিক কড়াকড়ি আরোপ, শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শতভাগ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার কারণেই র্যাগিংয়ের ঘটনা কমেছে। এছাড়া রাজনৈতিক সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও এ সাফল্যে ভূমিকা রেখেছে।
জানা গেছে, অতীতে জাবিতে র্যাগিংয়ের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ৪৮ ব্যাচের কযেকজন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং দেওয়ার অভিযোগে ৪৭ ব্যাচের ১১ জনকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ৫৩ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থীকে র্যাগিং দেওয়ার দায়ে ৫২ ব্যাচের শুভজিৎ বিশ্বাসকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। আরও ৬ জনকে জরিমানা ও সতর্ক করা হয়।
সর্বশেষ ২২ সেপ্টেম্বর, ৫৪তম ব্যাচের নবীনবরণের দিন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ক্লাসরুমে পরিচিতির নামে র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে বলা হয়, ৫৩ ও ৫২ ব্যাচের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী নবীনদের ক্লাসরুমে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে রেখে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন প্রক্টর। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মীমাংসা হয়েছে।
এদিকে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)।
জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘গণরুম, গেস্টরুমের সংস্কৃতি আর ফিরতে দেওয়া হবে না। র্যাগিং বিরোধী সেল গঠন করা হয়েছে। কেউ নির্যাতনের শিকার হলে অভিযোগ দিলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
প্রক্টর একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ‘র্যাগিং একটি সামাজিক ব্যাধি। এটি নবীনদের জন্য আতঙ্কের নাম। সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীরা যেন পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে আবাসিক ও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। কেউ গুরুতর অপরাধ করলে ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’










