বাংলাদেশে আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পুলিশ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান আরিফকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট স্বরূপনগর বিথারী হাকিমপুর চেকপোস্ট থেকে গ্রেফতার করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার (২৩ আগস্ট) দিনগত রাতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
আরিফ গত বছরের ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশের রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছায় অবস্থিত এপিবিএন-২ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। আরিফ শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার এপিএসও ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এরপর নিজ দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে সম্প্রতি সীমান্ত সংলগ্ন সাতক্ষীরা জেলায় বেশ কয়েক মাস লুকিয়ে ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি চলছে। এর সুযোগ নিয়ে শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে হাকিমপুর চেকপোস্ট এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের চেষ্টা করেন আরিফ। তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাকে আটক করেন।
সূত্র জানায়, শনিবার রাতে বিএসএফের সদস্যরা আটকের পরপরই আরিফকে বাংলাদেশে পুশ ইন করতে চান। কিন্তু তিনি বিএসএফ কর্মকর্তাদের বলেন, দেশে পাঠালেই আমাকে হত্যা করা হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ বাগবিতণ্ডার পর তাকে বসিরহাট মহকুমার অন্তর্গত স্বরূপনগর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই সময় তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তার বিরুদ্ধে ৫৬৬/২০২৫,১৪ বি ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা দেওয়া হয়েছে। এদিন আদালতে আরিফের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
এ ঘটনার পর বিএসএফ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ লিখিতভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুরো বিষয়টি ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, যদিও কলকাতার বাংলাদেশ হাইকমিশন বিষয়টি অস্বীকার করেছে।










