জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন বিএনপির সহ–আন্তর্জাতিক সম্পাদক রুমিন ফারহানাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুলিং করা হচ্ছে। তিনি সবাইকে এ ধরনের চর্চা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এনসিপির এই নেতা বলেন, রুমিন ফারহানাকে সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে ওনাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে। কোনো ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে একজন নারীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা, চরিত্র হনন করা-এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পর হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করলে সেই সুযোগ আওয়ামী লীগ নেবে বলে উল্লেখ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে, ভিন্নমত থাকবে এবং সেগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে এবং আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের এই ছোট ছোট পার্থক্য ভুলে গিয়ে একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমাদের ঐক্যটাকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে। বিভেদ তৈরি হলে সেগুলোকে আওয়ামী লীগ কাজে লাগাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের যে ফাটল ধরেছে, সেটি থেকে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ কিন্তু লাভবান হচ্ছে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহকে নিয়ে রুমিন ফারহানার পোস্ট প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কুৎসা; ব্যক্তিগত কুৎসা, তারপরে হচ্ছে ভিন্নমত দমন, ব্যক্তিগত চরিত্রহনন—এই বিষয়গুলো হচ্ছে গণতন্ত্রের শত্রু। ৫ আগস্টের পূর্বে যে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় নেমে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, সেটি ধরে রাখতে হবে।’
গুম হওয়া ব্যক্তিদের বিভিন্ন তথ্যচিত্র দেখা ও ভুক্তভোগী স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই ঘটনার শিকার আমাদেরও হতে হয়েছে। ৫ আগস্ট হয়ে যাওয়ায় আমরা হয়তো মুক্তি পেয়ে গিয়েছি এই শৃঙ্খল থেকে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন গুম কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, যাঁরা এখনো স্বজনদের সন্ধান পাচ্ছেন না, তাঁদের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নই, সেগুলোর সংস্কার চাই। আমরা চাই এই প্রতিষ্ঠানগুলো জনমুখী হোক। সে জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ পলিসি যেগুলো হচ্ছে, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে। উনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটি নির্বাচন দিয়ে চলে যাবেন। পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে, কিন্তু ইতিহাস, এই গুমের যাঁরা শিকার হয়েছেন, সেই পরিবারগুলো ওনাকে এই দায় থেকে কখনো মুক্তি দেবে না।’
হাসনাত নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘নির্বাচনের সময়টা আমাদের কাছে মুখ্য নয়। সেটা ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে। সেটা প্রয়োজনে ডিসেম্বরে হতে পারে। সেটা প্রয়োজনে আগামীকালও হতে পারে। আমার চাওয়া সংস্কার প্রস্তাব ও প্রস্তাবনাগুলোর আইনি কাঠামো নিশ্চিত করা।’










