জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১৬ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ নম্বর হলে (আগের শেখ রাসেল হল) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে এই র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্ত করে হল প্রভোস্টের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৩ অক্টোবর) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান এ সিদ্ধান্ত নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গতকাল রাতের ঘটনার পর আজ প্রভোস্ট রিপোর্ট জমা দেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে উপাচার্য ১৬ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছেন। একই সঙ্গে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।”
তদন্ত কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মওলানা ভাসানী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কামরুজ্জামান। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সহকারী প্রক্টর আল আমিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার, যিনি সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা সবাই বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের)। তারা হলেন—আবু সাঈদ, তানভীর রহমান মুন, আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, আবু তালহা রনি, রাজিব শেখ, ইয়ামিন খান হৃদয়, জান্নাতুল আদন, আহমেদ আরেফিন রাতুল, রেজওয়ান ইসলাম রিফাত, তাসনিমুল হাসান জুবায়ের, রুম্মান, রাকিবুল হাসান নিবিড়, জাহিদুল ইসলাম, উশান্ত ত্রিপুরা, আব্দুল্লাহ আল সাঈদ, মাহমুদুল হাসান ফুয়াদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান ও এম মাহামুদুন্নবী।
এর আগে রোববার (১২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২১ নম্বর হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষে র্যাগিংয়ের এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের বরাত জানা যায়, ৫৪তম ব্যাচের নবীনদের প্রথমে রফিক-জব্বার চত্বরে ডেকে পরে ওই কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ২০ জন নবীনকে অন্ধকার ঘরে দাঁড় করিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় এবং মোবাইলফোন বন্ধ রাখতে বাধ্য করা হয়।
একজন নবীন শিক্ষার্থী বলেন, “দরজা-জানালা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা সবাই ভয় পেয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন বড় ভাই এসে লাইট অন করেন।”
ঘটনা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “র্যাগিংয়ে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না। পরিচয় পর্বের নামে এই অপসংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।”










