টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠছে। এ জন্য সরকার এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া নামে দুটি জাহাজকে কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। প্রতিদিন এই রুটে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন।
তবে দ্বীপে রাত যাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকেরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। জাহাজে ১৩–১৪ ঘণ্টা যাত্রা শেষে সেন্ট মার্টিনে ঘোরার সুযোগ থাকছে মাত্র এক ঘণ্টা। এতে টিকিট বিক্রি কমে যাওয়ায় জাহাজমালিকরাও লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার শর্তে পর্যটকেরা আগ্রহী নন। ৮০০ আসনের একটি জাহাজ চালাতে জ্বালানিসহ খরচ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা, কিন্তু টিকিট বিক্রি থেকে আয় হয় দুই-আড়াই লাখ টাকা। ফলে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়। তিনি জানান, ইনানী সৈকতের নৌবাহিনীর জেটি দিয়ে যাত্রা অনুমতি পেলে পর্যটকের সাড়া মিলত, তবে পরিবেশ অধিদপ্তর সেখানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
হোসাইন ইসলাম আরও জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি—এই দুই মাস সেন্ট মার্টিনে রাত যাপনের সুযোগ থাকবে। গত মৌসুমের ওই দুই মাসে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটক দ্বীপটি ভ্রমণ করেছিলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা জানান, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শনিবার থেকে কক্সবাজারের নুনিয়াছটা ঘাট থেকে দুটি জাহাজ চলাচল শুরু করবে। ইনানী বা টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বা ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে টিকিট কিনে কিউআর কোডসহ ট্রাভেল পাস নিতে হবে।
সরকারি ১২ নির্দেশনা অনুযায়ী :
- নভেম্বরে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে; রাত যাপন নিষিদ্ধ।
- ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত সময়ের জন্য রাত যাপনের অনুমতি থাকবে।
- অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে চলাচল করতে পারবে না।
- দ্বীপের পরিবেশ সংরক্ষণে সৈকতে রাতের আলো, শব্দ, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ, ও সামুদ্রিক প্রাণীর ক্ষতি নিষিদ্ধ।
- সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ মোটরযান চলাচল নিষিদ্ধ।
- পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটনের কেন্দ্র সেন্ট মার্টিনে এ নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে উঠলেও রাত যাপন নিষিদ্ধ থাকায় মৌসুমের শুরুতেই পর্যটক সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।










