নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি ছয় মাসের বেশি সময় এই পদে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আগামী বছরের ৫ মার্চ দেশটির জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আসা সরকারের হাতে তিনি ক্ষমতা তুলে দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর আজ রোববার প্রথমবারের মতো বক্তব্য দিলেন সুশীলা কারকি। তিনি বলেন, ‘আমি এই দায়িত্ব চাইনি। রাজপথে নামা বিক্ষোভকারীদের আহ্বানে আমি সাড়া না দিয়ে পারিনি।’
সম্প্রতি নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে কে পি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। সেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। এরপর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নেপালের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধানের আলোচনার ভিত্তিতে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী সুশীলা বলেন, ‘জেন–জি প্রজন্মের চিন্তাধারার জায়গা থেকে আমাদের কাজ করতে হবে। এই প্রজন্ম দুর্নীতির অবসান, সুশাসন ও অর্থনৈতিক সমতা চায়।’
বিক্ষোভে ব্যাপক ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি লজ্জা বোধ করছি। এসব জরুরি স্থাপনা ধ্বংসকারীরা যদি নেপালি হয়ে থাকে, তবে তাদের কীভাবে নেপালি বলা যায়?’
বর্তমান পরিস্থিতিতে সুশীলা কারকি ও তাঁর মন্ত্রিসভার সামনে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, ভাঙচুর হওয়া পার্লামেন্ট ভবন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুনর্নির্মাণসহ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পাশাপাশি পরিবর্তনের দাবি তোলা জেন-জি প্রজন্ম এবং যাঁরা নেপালের গণতান্ত্রিক যাত্রা ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন, তাঁদের আশ্বস্ত করাও এখন তাঁর বড় দায়িত্ব।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নেপালে দুর্নীতি, বেকারত্ব, বৈষম্য ও রাজনীতিবিদদের স্বজনপ্রীতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। এরই মধ্যে সম্প্রতি ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এতে ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। এর জেরে ৮ সেপ্টেম্বর রাজপথে নামেন তরুণেরা। দুই দিন ধরে তা অব্যাহত থাকে। বিক্ষোভ পরিস্থিতি বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এ সময় রাজনীতিবিদদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অসন্তোষ থেকে সৃষ্ট সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এর মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।










